এই পণ্যটি সরাসরি বিক্রয় যোগ্য । ক্রয় করতে সাপ্লায়ারের সাথে কথা বলার দরকার নেই। Buy Now বাটনে ক্লিক করে ক্রয় করুন।
পাইকারি পণ্যের দাম সর্বদা পরিবর্তনশীল। পণ্যের বর্তমান দাম জানতে উপরের মোবাইল নম্বরে সাপ্লায়রকে সরসরি ফোন করুন।
বিদেশি সাপ্লায়ার কে LC বা TT তে দাম পরিশোধ করুন ৷ দেশী সাপ্লায়ার কে ক্যাশ অন ডেলিভারী বা ফেস টু ফেস ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন । কোন ভাবেই অগ্রিম টাকা পয়সা লেনদেন
করবেন না। কুরিয়ারে কন্ডিশনে পণ্য হাতে পেয়ে টাকা প্রদান করবেন৷
আপনার অসাবধানতায় কোন প্রকার প্রতারণার স্বীকার হলে আমরা দায়ী নই ৷
অনলাইনে পন্য ক্রয়ের আগে সমস্ত সিক্যুরিটি গ্রহন করে নিন ৷
আপনি সরাসরি এই পণ্যটি ওয়েবসাইট থেকে অর্ডার করতে পারবেন। ক্যাশ অন ডেলিভারি মেথডে পেমেন্ট করতে পারবেন । কুরিয়ার চার্জ যোগ হতে পারে এই পণ্যের মূল দামের সাথে। সঠিক পণ্য না পেলে সমস্ত দায়ভার সাপ্লায়ার বহন করবে। দেখে শুনে পণ্য ক্রয় করুন ।
এই পণ্যটির কোন কুরিয়ার চার্জ নেই। ১০০% পেমেন্ট এই ওয়েবসাইটের
পেমেন্ট গেটওয়ে দ্বারা কমপ্লিট করতে হবে। পেমেন্ট কমপ্লিট হবার ১ দিনের
মধ্যে পণ্য পাঠিয়ে দেয়া হবে সুন্দরবন কুরিয়ারে।
চুই ঝালের কথা বলতেই অনেকের জ্বিবে জ্বল চলে আসে। চুইঝাল একটি প্রচলিত মসলা জাতীয় অর্থকরী ফসল। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এটি বেশি চাষ হয়ে থাকে। স্থানীরা এটিকে চুইঝাল বলে থাকে। পিপারাসি পরিবারের সপুষ্পক লতা চুই। এর বৈজ্ঞানিক নাম Piper chaba। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় প্রজাতি। দেশে সাতক্ষীরা এবং খুলনাঞ্চলে সবচেয়ে ভালো চুই উৎপাদন হয়।
অনেক বছর ধরে খুলনা এবং সাতক্ষীরার ভোজনরসিকদের কাছে চুইয়ের কদর সবচেয়ে বেশি। মাংসেই চুই বেশি ব্যবহার করা হয়। অনেকে চুই দিয়ে মাছও রান্না করে থাকেন। চুই ঝালকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা, পাটকেলঘাটা, তালায়সহ বেশ কয়েক জায়গায় হোটেল গড়ে উঠেছে। শুধুমাত্র চুইঝাল দিয়ে খাসির মাংসের কারণে খুলনার চুকনগরে আব্বাসের হোটেলের সুখ্যাতি রয়েছে সারা দেশে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুই লতাজাতীয় গাছের কা- ধূসর বর্ণের ও পাতা পান পাতার মতো সবুজ রঙের। কাণ্ড থেকে আকর্ষি বের হয়, সেই আকর্ষি মাটিতে বিশেষভাবে রোপন করলে আবার সেটা গাছ হয়। এর কাণ্ডটি মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চুইঝাল একধরনের মসলা। এর ডাল মসলা হিসেবে গরু ও খাসির মাংসে দেওয়া হয়। আঙুলের মতো চিকন এ গাছের লতার দাম কম। আর গাছের গোড়ার দাম সবচেয়ে বেশি। লতা ফেড়ে মাংস রান্নার সময় দেওয়া হয়। এতে এক অপূর্ব স্বাদের সৃষ্টি হয়। সেই স্বাদ ঝাল ঝাল। অনেকে মাংস রেখে শুধু চুই ঝালই মজা করে খান। এছাড়া এর অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে। পাতা, কাণ্ড, শিকড়, ফুল, ফল, ডাল সবই ঔষধি গুণসম্পন্ন।
মাংসের স্বাদ বাড়তে চুই ঝালের বিকল্প নেই। বিভিন্ন সামাজিক আচার অনুষ্ঠানসহ ঈদ পার্বণে চুই ঝালের কদর বেড়ে যায় অনেকগুণ। সাতক্ষীরা বড় বাজার, পাটকেলঘাটা, তালা কালাগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন বাজারে চুই ঝাল বিক্রি হয়ে থাকে প্রতি কেজি ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।
চুইয়ের গাছ কিভাবে বেড়ে ওঠে সেটি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে কাটিং লাগাতে হয়। কাটিং থেকে নতুন চারা বের হলে তা কোন ফল বা কাঠ গাছে দিয়ে দিলে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে। চুই লতাজাতীয় গাছ, তাই আম, জাম, সুপারি, নারকেল ইত্যাদি গাছের গোড়ায় এটি রোপণ করা হয়। এক বছর বয়সী চুই খাওয়া যায়, তবে ৫-৬ বছরের চুই উত্তম। এটি সাতক্ষীরার স্থানীয় বাজার ছাড়াও যশোর, খুলনা, ঢাকাসহ দেশ-বিদেশেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা এলাকার চাষিরা জানান, আম, শিমুল গাছের সাথে ভাল ফল পাওয়া গেছে। সাধারণত আম, সুপারিসহ কাঠ জাতীয় গাছের গোড়া থেকে ১২-১৫ ইঞ্চি দূরে গর্ত করে চুই গাছের কাটিং লাগান হয়। গর্তের মধ্যে কিছু গোবর, বর্জ্য, ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টি এস পি, ৫০ গ্রাম পটাশ দিয়ে গর্তে ও মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ৭ দিন রেখে কাটিং লাগাতে হয়। গর্তে একটি খুঁটি কাত করে বড় গাছের সাথে বেঁধে দিলে ৩০-৪০ দিনের মাঝে তা গাছের কাণ্ডের সাহায্যে উপরে উঠে যায়। এভাবে চুই গাছ বাড়তে থাকে।
সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজারের চুই ঝাল বিক্রেতা শাহিনুর রহমান বলেন, 'আমি প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি চুই ঝাল বিক্রি করি। বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে চুই ঝালের বিক্রি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তিনি আরও বলেন, তালা, কালিগঞ্জ, পাটকেলঘাটা এলাকা থেকে চাষীরা আমাদের চুই ঝাল দিয়ে যায়।'
চুই ঝাল কেনার সময় কথা হয় ওয়ালিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় একটি কাজে এসেছেন। যাওয়ার সময় ৫০০ টাকা দিয়ে ২ কেজি চুই ঝাল কিনে নিয়েছেন।
সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকার শফিউল আলম খান বলেন, 'আমি ৩ কেজি চুই কিনেছি। চুই ছাড়া আমাদের বাড়িতে কোন মাংস রান্নাই হয় না। বাড়ির সবার প্রিয় চুই ঝাল। তবে শাখা ডাল থেকে শেকড়ে ঝাল বেশি বলে এর দামও একটু বেশি। শুকনো চুইয়ের দাম আরো ২-৩ গুণ।
জেলার পাটকেলঘাটা থানার তৈলকুপি এলাকার অমিত কুমার সাধু জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে চুইয়ের আবাদ করছি। এখন কৃষি অফিসের সাহায্য নিয়ে বেশি করে চাষ করছি। বছরে প্রায় ৫০ হাজার টাকার চুই বিক্রি করে থাকি। আমারও বাড়ির সকল তরকারিতে চুই ঝাল ব্যবাহার করে থাকি।
তিনি আরো বলেন, জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায়ও এটি নিয়ে যাচ্ছে । একজন সাধারণ কৃষক মাত্র ২-৪টি চুই গাছের চাষ করে নিজের পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারেন। অনেকে আবার চুই ঝালের গোড়াসহ নিয়ে যায়। আমাদের বাড়ির আম গাছে অনেক পুরাতন একটি গাছ ছিল সেটি ৫০ হাজার টাকায় দিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে যাচ্ছে এক বেপারিরা। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে এটির চুই ঝালের চাষ আরো বাড়তে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাতক্ষীরা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার মটরসাইকেল চালিয়ে পাটকেলাটা ব্রীজের নিচে গণির হোটেলে শুধুমাত্র চুইঝাল খাওয়ার জন্য এসেছেন মাহবুবর রহমান। তিনি বলেন, সাতক্ষীরার অনেক খাবারের হোটেলে খেতে গেলে পাওয়া যায় এই চুই ঝালের স্বাদ। পাটকেলাটার বেশ কয়েকটি হোটেল শুধুমাত্র চুই ঝালকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এখানে ভালো রান্না হয় এজন্য এত দূর থেকে এই চুই ঝাল খাওয়ার জন্য এসেছি। তিনি চুই ঝাল নামেই বোঝা যায় এটি স্বাদে ঝাল, কিন্তু এই ঝাল একটু আলাদা। এর রয়েছে একটি আলাদা গন্ধ যা তরকারি বা রান্না মাংসে আনে আলাদা এক আমেজ। আরও মজার ব্যাপার হলো খাওয়ার পর এই ঝাল বেশীক্ষণ স্থায়ী হয়না।
স্থানীয় চাষিরা মনে করেন বাংলাদেশে মরিচের বদলে চুইয়ের চাষের বিস্তার ঘটিয়ে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। অবাক করা বিষয় হল এই যে খুলনা-যশোর-সাতক্ষীরার চুই দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও রপ্তানি হচ্ছে। সরকার যদি এর দিকে সুনজর দেয় তবে আমাদের দেশ এখান থেকে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।
হারবাল চিকিৎসক হাকিম তপন কুমার দে বলেন, চুই ঝাল শুধু মাত্র মসলা নয় ভেষজ ওষুধ, চুইলতার শিকড়, কাণ্ড, পাতা, ফুল ফল সব অংশই ভেষজগুণ সম্পন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ পুরো গাছ উপকারি। মানব শরীরের বিভিন্ন রোগ নিবারণে এটি অনেক কার্যকর। গ্যাস নিবারণ, কোষ্ঠকাঠিন্য তাড়াতে, রুচি বাড়াতে,ক্ষুধামন্দা দূর করতে কার্যকর ওষুধ এটা। অর্থাৎ পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ সারাতে খেতে চুই ঝাল খাওয়া যাবে। সর্দির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মাত্র এক ইঞ্চি পরিমাণ চুই ঝালের সঙ্গে আদা পিষে খেতে পারেন। স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা প্রশমন করে ঘুম আনতে সহায়তা করে চুই ঝাল। হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, কাশি, কফ, ডায়রিয়া, রক্তস্বল্পতা, শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে অথবা শরীরের ব্যথা সারাতে পারে চুই ঝাল।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় সাড়ে ৩ হেক্টর জমিতে চুই ঝালের চায় হয়। জেলায় বিভিন্ন বাড়িতে লাগানো পাশাপাশি এখন কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু করছে।
চুই ঝাল
শব্দটি এখন অনেকের কাছেই একটা পরিচিত নাম । যদিও চুই ঝাল খুলনা বা দক্ষিণ
অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশের অনেকেই এটার সাথে পরিচিত নন। তবে চুই
ঝাল বর্তমানে দেশের সব যায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে। আজ চুই ঝাল নিয়েই বিস্তারিত
আলোচনা করার চেষ্টা করবো। আজকের পোস্টে লেখবো চুই ঝাল এর উপকারিতা? চুই ঝাল
কোথায় পাওয়া যায়? চুই ঝাল চারা কোথায় পাওয়া যায়? চুই ঝাল রেসিপি?
চুই ঝাল অনলাইন? চুই ঝাল সংরক্ষণ? চুই ঝালের গাছ, চুই ঝাল গাছের ছবি
ইত্যাদি।
চুই ঝাল কি?
চুই ঝাল হলো এক ধরনের একটি মসলা
জাতীয় গাছের কাণ্ড। একে অনেকে চুই, অনেকে চই বা চই ঝাল বলে থাকেন। এর
বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Piper chaba। এটি প্পারাসি পরিবারের একটি সপুস্পক লতা।
এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটি প্রজাতি। এটা ভারত এবং এশিয়ার
অন্যান্য উষ্ণ এলাকাসহ মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিংগাপুর ও শ্রীলংকায় ও
বাংলাদেশে প্রচুর পরিমানে দেখা যায়। এই গাছ মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে
থাকে। খুলনা অঞ্চলে এটি রান্নায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মাংসে ঝাল স্বাদ
বাড়াতে এর তুলনা নেই। এটি ঝাল হলেও শরীরের কোন ক্ষতি করে না। এর অনেক ঔষধি
গুন রয়েছে। খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা ও নড়াইল এলাকায় চুল ঝাল মসলা হিসেবে
অনেক জনপ্রিয়।
চুইঝাল কিভাবে খাওয়া হয়?
চুইঝাল
সাধারনত তরকারির সাথে মরিচের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাধারনত
মাংসের সাথে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কান্ডের ছাল ছাড়িয়ে এটি ছোট ছোট পিস
করে তরকারিতে দেওয়া হয়ে থাকে। এটি ঝাল স্বাদের হয়ে থাকলেও এতে শরীরের কোন
ক্ষতি হয় না। ছোলা বুটের সাথেও এটি দেওয়া হয়। তবে নড়াইলের একটি বিশেষ পদ
চুই ঝাল ভাঁজি, এটিতে সুধুই চুই ভেজে পরিবেশন করা হয়। তবে চুই দিয়ে খুলনা ও
চুকনগরের ২টি বিশেষ খাবারের নাম বেশ জনপ্রিয় সেগুলো হলো, চুই ঝাল দিয়ে
খাসির মাংস ও চুই ঝাল দিয়ে গরুর মাংস।
চুই ঝাল কোথায় পাওয়া যায়
খুলনা,
যশোর, সাতক্ষীরা ও নড়াইলে কাঁচা বাজারে এটি কমোন মসলা। এখানে গেলে সহজেই
পেয়ে যাবেন। তবে ঢাকায়ও আজ কাল অনেকেই অনলাইনে এর বিক্রি করছেন।
চুই ঝালের দাম কেমন
চুই
ঝাল একটু দামী মশলা। ভালো মানের চুই এর দাম ১২০০-১৫০০ টাকা হতে পারে। তবে
চিকন সাইজের চুই গুলো ৪০০টাকায় ও পেয়ে যাবেন। তবে চুই যত বড় হয়, চুই এর দাম
তত বেশি হয় এভাবে বিক্রি করা হয়।
চুই ঝালের উপকারিতা
চুই
ঝালের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর কান্ড, পাতা, ফুল সব গুলোরই ওষধি গুন
রয়েছে। গ্যাসট্রিক, কোষ্ঠকাঠিন্য, রুচি বাড়াতে এবং ক্ষুধামন্দা সহ নানা
রোগে এটি ভালো উপকার দেয়। এটি স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা প্রশমন
করতে সহায়তা করে।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি মসলা উপাদান হলো চুইঝাল।
রন্ধনশিল্পীদের কাছে চুইঝাল খুব জনপ্রিয় একটি রন্ধন উপাদান। পুষ্টি
বিশেষজ্ঞদের মতে রান্নার স্বাদ আনার পাশাপাশি চুইঝালের রয়েছে অনেক ঔষধি
উপাদান। যেমন সিলেটের বিখ্যাত চুইঝালের মাংসের সুনাম এখন অঞ্চলভেদে সব
জায়গায় ছড়িয়ে গিয়েছে।
চুইঝাল গাছ সম্পর্কে কিছু তথ্য:- চুই ঝাল
বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে – piper chaba । এটি পিপারাসি পরিবারের সপুষ্পক লতানো
উদ্ভিদ। পান ও চুই ঝাল একই পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। চুই ঝালের গাছ দেখতে
অনেকটা পানের গাছের মতন লতানো তবে পাতাগুলো কিছুটা অন্যরকম হয় যথা লম্বা ও
পুরু। এর পাতায় কোন ঝাল স্বাদ পাওয়া যায় না।
রান্নার জন্যে যেভাবে ব্যবহার করা হয়:-
চুইঝাল গাছের কান্ড ও ডাল মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। রান্নায় ঝাল স্বাদ
আনতে মরিচের পাশাপাশি চুইঝালও ব্যবহার করা হয়। এর ঝাল খাবারের স্বাদ
বাড়ায় আবার শরীরেরও কোনো ক্ষতি করে না।
ঝোল জাতীয় রান্নাসহ প্রায় সব
কিছুতেই চুইঝাল স্বাদ বৃদ্ধি করে। এ গাছের কাণ্ড বা লতা কেটে ছোট টুকরো করে
মাছ-মাংসের রান্নায় ব্যবহার করা হয়। রান্নার পর এই টুকরো চুষে বা
চিবিয়ে খাওয়া হয়। শুধু ঝাল স্বাদের জন্য নয় চুইয়ের রয়েছে নিজস্ব
স্বাদ ও ঘ্রাণ।
চুইঝালে যেসব রাসায়নিক উপাদান রয়েছে:-
পিপালারটিন – ৫ %
অ্যাকালয়েড-৫%
সুগন্ধি তেল-৫%
পোপিরন-৪%-৫%
এর শিকড়েই পিপারিন রয়েছে -১৩%-১৪%
এছাড়া পোলার্টিন, গ্লাইকোসাইডস, মিউসিলেজ, গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সিজামিন, পিপলাসটেরল ইত্যাদি রয়েছে।
চুইঝালের যেসকল ঔষধি গুণ রয়েছে:-
১. চুইঝাল গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
২. খাবারের রুচি বাড়াতে এবং ক্ষুধামন্দা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
৩. পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ সারাতে চুইঝাল অনেক উপকারী উপাদান।
৪. স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা প্রশমন করে চুইঝাল।
৫. শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে এবং শরীরের ব্যথা সারায়।
৬.কাশি, কফ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট থেকে উপশম করে।
৭. ডায়রিয়া ও রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
৮. এক ইঞ্চি পরিমাণ চুই লতার সাথে আদা পিষে খেলে সর্দি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
চুইঝালের বাণিজ্যিক প্রসারঃ –
চু্ইঝালকে
কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের পারিবারিক অর্থনৈতিক কাঠামো।
একজন কৃষক ৪ টি চু্ইঝাল গাছ থেকে চুইঝাল সংগ্রহ করে তার পরিবারের
ভরণপোষণের খরচ চালাতে পারেন। স্থানীয় বাজারে কেজি প্রতি চুইঝালের দাম পরে
প্রায় ৭০০-১৫০০ টাকা।
কাঁচা চুইঝাল থেকে শুকনো চুইঝালের দাম প্রায় ২-৩
গুন বেশী হয়। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক গাছ থেকে বছরে ২০-২৫ কেজি চুইঝাল সংগ্রহ
করা যায়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চুইঝাল এখন বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে।
বর্তমানে চুইঝালকে কেন্দ্র করে দেশের অর্থনীতিতে বড় সাফল্য অজর্ন করা সম্ভব
বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খুলনার গল্লামারী কাঁচাবাজার থেকে: খুলনা
অঞ্চলে খাবারে চুই ঝালের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। বৃহত্তর খুলনা বা যশোর জেলায়
বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে এটি খুবই জনপ্রিয় হলেও শহরেও এর কদর তুঙ্গে। বলতে
গেলে ভোজনবিলাসীরা চুই ঝাল ছাড়া মাংস রান্নার কথা ভাবতেই পারেন না। চুই
ঝালের সুঘ্রাণ মাংসকে করে তোলে অতুলনীয় সুস্বাদু। আসন্ন কোরবানিকে সামনে
রেখে দাম বাড়ছে এই মসলাটির।
খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, চুই ঝাল যত মোটা হবে তত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
চুই বিক্রেতা মাসুম বলেন, খুলনাঞ্চলের চুই কেজি প্রতি ৩শ’ থেকে ৮শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। যে চুই যত মোটা তার দাম তত বেশি।
একই
বাজারের ব্যবসায়ী ইকরাম বলেন, আমরা ফুলতলা, ডুমুরিয়া ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের
চুই বেশি বিক্রি করি। এ চুইয়ের স্বাদ আলাদা। প্রকারভেদে কেজি প্রতি ৯শ’
থেকে ২৫শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল্লাহ
জানান, খুলনাঞ্চলে চুই চাষে বেশ সাড়া পড়েছে। পাহাড়ি এলাকায় চুই
প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে। তবে খুলনাঞ্চলে চুইয়ের আবাদ করতে হয়। শুকনো এবং
কাঁচা উভয় অবস্থায় চুই বিক্রি হয়। শাখা-ডাল থেকে শিকড়ের ডালে ঝাল বেশি হয়
বলে এর দামও একটু বেশি। শুকনো চুইয়ের দাম কাঁচা অবস্থার চেয়ে আরও ২-৩ গুণ
বেশি ।
নাসির নামের এক ক্রেতা বলেন, খুলনাঞ্চলের চুই সারাদেশে
জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। অনেক হোটেলে চুই দেওয়া খাবার পরিবেশন করা হয়। সেসব
হোটেলে ভিড়ও বেশি। হোটেলে চুইয়ের চাহিদা বেশি হওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের বেশি
দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
কেওড়া ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক
শরিফুল ইসলাম হিরণ বলেন, চুই ঝাল ছাড়া মাংস খেতে চায় না ক্রেতারা। খাবারের
মেন্যুতে কোনো না কোনোভাবে চুই থাকলে তারা খুশি হন। যে কারণে
ভোজনবিলাসীদের চাহিদা মেটাতে আমরা সব ধরনের মাংসে চুই ঝাল রাখি।
‘চুইঝাল’ চাষ ও পরিচর্যা
জলবায়ু
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার মিটার উঁচু পর্যন্ত জায়গায় ‘চুইঝাল’ জন্মানো
যায়। চাষের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা ১০ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
জমি ও মাটির প্রকৃতি :
দো-আঁশ ও বেলেদো-আঁশ মাটি এবং পানি নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত ও ছায়াময় উঁচু জমিতে সাধারণত চুইঝাল চাষ করা হয়।
রোপনের সময় :
বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠ এবং আশ্বিন থেকে কার্তিক মাস।
বীজ :
কাটিং
পদ্ধতিতে এর কাণ্ড বা শাখা ৫০ থেকে ৭৫ সেন্টিমিটার লম্বা করে কেটে সরাসরি
মাটিতে রোপন করা হয়। স্থানীয়ভাবে কাটিং বা শাখাকে পোড় বলা হয়। একটি পোড়ে
কমপক্ষে চার থেকে পাঁচটি পর্ব সন্ধি থাকে। তবে পলিব্যাগে চারা তৈরী করে
নিয়ে সেই চারা মুল জমিতে লাগালে চারার মৃত্যুর হার কম হয় এবং গাছের বৃদ্ধি
বেশি হয়।
কাটিং শোধন :
চারা তৈরীর আগে কাটিং অবশ্যই শোধন করে
নিতে হবে। এক লিটার পানিতে দুই থেকে তিন গ্রাম Provax, নোইন ও ব্যাভিষ্টিন
অথবা কার্বেনডাজিম গ্রুপের যে কোন ছত্রাকনাশাক মিশিয়ে তার মধ্যে কাটিং ৩০
মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পর কাটিং তুলে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে ফেলে
কাটিং পলিব্যাগে বা বীজতলায় রোপন করতে হবে।
চারা রোপনের গর্ত তৈরী :
চুই-এর
চারা রোপনের জন্য গর্তের মাপ হবে সবদিকে এক থেকে দুই মিটার বা একহাত। গর্ত
থেকে তোলা মাটির তিন ভাগের এক ভাগ বাদ দিতে হবে। গর্তের মধ্যে কিছু গোবর,
বর্জ্য, ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ গ্রাম টিএসপি, ৫০ গ্রাম পটাশ দিয়ে গর্তে ও
মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে সাতদিন রেখে কাটিং লাগাতে হয়। তবে গর্ত
এমনভাবে ভরতে হবে যেনো কিছু মাটি গর্তেও উপর ঢিবি হয়ে থাকে। এতে গর্তের
মধ্যে পানি জমে থাকার সম্ভাবনা কম থাকে।
চারার হার :
‘চুইঝাল’
সাধারণত গাছের গায়ে লাগানো হয়ে থাকে। এজন্য গাছের দুরাত্বের উপর চারার হার
নির্ভর করে। তবে সমতল জমিতে রোপনের জন্য প্রতি হেক্টরে ২৭৫ থেকে ৩০০টি চারা
প্রয়োজন হয়।
চারা রোপন :
যেখানে আগেই গর্তে সার ও সারমাটি ভরাট
করে রাখা হয়েছে, সে গর্তের মাঝখানে সামান্য দূরে দূরে দুটি চারা লাগাতে
হবে। এতে কোন চারা মারা গেলে অন্য চারাটি বেড়ে ওঠবে। চারা লাগানোর পরপরই
ঝাঝরি দিয়ে সেচ দিতে হব। একটি কাঠি পুতে লতায় অবলম্বন এমনভাবে দিতে হবে
যাতে চুঁইগাছটি সহজে অন্য গাছে বেয়ে ওঠতে পারে। তবে বৃষ্টি হলে সেচ না দিয়ে
অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে।
বাউনি দেওয়া :
চুই লতানো গাছের
লতা আট থেকে দশ মিটার পর্যন্ত বাইতে পারে। তবে লতার গিঁট থেকে গজানো পাশের
শাখাগুলো বেশি লতায় বিলম্বা হয় না। লতা ওপরে উঠার জন্য অবলম্বন দরকার।
সাধারণত আম, কাঠাল, মান্দার, নারিকেল, সুপারি, জিকা ইত্যাদি গাছের কাণ্ডকে
চুইগাছের অবলম্বন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। লতার গিঁট থেকে ছোট ছোট শিকড় গজায়
এসব শিকড়ের দ্বারা ‘চুইঝাল’ আশ্রয়ী গাছে কাণ্ডকে আকড়ে ধরে। পানের লতার মতো
চুঁইগাছও গ্রীষ্মের প্রখর রোদ সহ্য করতে পারে না। তাই বা উনিগাছে কিছু
ডালপালা রাখা প্রয়োজন।
সার ব্যবস্থাপনা :
ভাল ফলন পেতে হলে
চুইগাছে সঠিকভাবে সার দিতে হবে। রোপনের পর পাঁচবছর পর্যন্ত সার কম লাগে।
পাঁচবছর পর্যন্ত প্রতি গাছে ১০ কেজি গোবর বা কম্পোষ্ট সার, ২৫০ গ্রাম
টিএসপি, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ১০০ গ্রাম এমওপি সার প্রতি বছর দিতে হবে। তবে
সার সমান দু’ভাগ করে মে মাসে একবার এবং সেপ্টেম্বর মাসে একবার প্রয়োগ করলে
ভাল হয়। গর্তে গাছের গোড়া থেকে কিছু দূরে ঘুরিয়ে চারিদিকে এই সব সার দিয়ে
মাটি ভাল করে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।
গাছ ছাঁটাই :
চুই
এর গাছ লতানো স্বভাবের বলে বেশ ভাল পাতা গজায়। এজন্য অনেক সময় ঝোপ হয়ে
যায়। তাই পাঁচবছর বয়স হলে চার থেকে পাঁচটি ভাল শাখা লতা রেখে অন্যগুলো
ছেঁটে দিতে হবে। তবে পাঁচবছরের আগে কোন ছাটাই দরকার নেই।
বালাই ব্যবস্থাপনা :
স্কেল
বা খোসপোকা, কাণ্ড ও ডগা ছিদ্রকারী পোকা, মিলিবাগ বা ছাতরা পোকা, থ্রিপস,
মাকড়, ব্যাকটেরিয়াজনিত লতা পচা ফসল সংগ্রহ চুঁই রোপনের একবছরের মাথায়
খাওয়ার উপযোগি হয়। তবে ভাল ফলনের জন্য পাঁচ থেকে ছয় বছরের গাছই উত্তম।
ফলন :
হেক্টর
প্রতি প্রায় দুই দশমিক শূন্য থেকে দুই দশমিক পাঁচ মেট্রিকটণ ফলন পাওয়া
যায়। পাঁচ থেকে ছয় বছরের একটি গাছ থেকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত ফলন
পাওয়া যায়।
চুইঝাল। অনেকে এটাকে চইঝাল বলে। চুই নামেও ডেকে থাকেন কেউ কেউ। চুইয়ের বোটানিক্যাল নাম (Piper Chaba) পিপার চাবা। যে যেই নামেই ডাকুক না কেনো চুইঝাল দারুণ একটি মসলা। চুইঝালের নামের সাথে স্বাদেরও মিল আছে। এ মসলাটি স্বাদে ঝাল। শুধু যে ঝাল তা নয় খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেয় এ মসলাটির ব্যবহার। চুইঝালের ব্যবহার এশিয়া অঞ্চলেই বেশি। বাংলাদেশেও মোটামুটিভাবে চুইঝাল ব্যবহারের প্রচলন আছে। চুইঝাল গ্রীষ্ম অঞ্চলের লতাজাতীয় একটি গাছ। প্রাকৃতিক ভাবে এটি একটি ভেষজগুণ সম্পন্ন উদ্ভিদ। চুইঝালকে বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়। গাছের লতা অংশটুকুর পাশাপাশি শিকড়ও খাওয়া যায়। তবে শিকড়ের অংশের স্বাদই বেশি। আবার এ গাছে হওয়া ফল লবঙ্গের মতো ব্যবহার করা যায়। চুইঝালকে মরিচের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। গাছের লতা বা কান্ডকে ছোট টুকরায় কেটে তরকারি বা ডালে ব্যবহার করলে ঐ তরকারি বা ডালের স্বাদ বহুগুণে বেড়ে যায়। বড় মাছ বা মাংসের সাথেও খাওয়া যায়। আবার কাচা কান্ড শুকিয়ে তা গুড়ো করে বহুদিন পর্যন্ত রেখে দেওয়া যায়। চুইঝালের গুড়োকে গুড়া মরিচের মতো করে ব্যবহার করা যায়।
এবার আসি চুইঝালের ঔষধি গুনগুলো নিয়ে। চুইঝালের অনেক গুন। একে একে তুলে ধরছি....
১. গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান করে।
২.পাকস্থলী এবং অন্ত্রের প্রদাহ সরাতে কাজ করে।
৩.কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
৪.খাবারের রুচি বাড়ায়।
৫.ক্ষুধামন্দা দূর করে।
৬.কাশি, কফ, হাপানি, শ্বাসকষ্ট দূর করে।
৭.ডায়রিয়া ও রক্তস্বল্পতা দুর করে।
৮. মানসিক অস্থিরতা প্রশমন করে।
৯.শারীরিক দুর্বলতা দূর হয়।
১০.শরীরের অন্যান্য ব্যথা কমায়।
১১.সামান্য আদার সাথে মিশিয়ে খেলে সর্দি কমে।
১২.আপনার ঘুম যদি কম হয়, তাহলে পর্যাপ্ত ঘুমাতে সহায়তা করবে।
এরকম আরও অনেক ঔষধি গুণ আছে।
শুধু খাওয়াতেই সীমাবদ্ধ নয় আপনি এই চুইঝাল থেকে আয়ও করতে পারেন। চুইঝাল গাছ লাগাতে পারেন। আবার চুইঝাল পাইকারি ভাবে কিনে খুচরা বিক্রি করতে পারেন। চুইঝাল ব্যবসার একটি ভালো দিক হলো এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে। দামও ভালো পাওয়া যায়। গ্রামের মানুষ চুইঝাল থেকে বেশি উপকৃত হতে পারে। আপনি আপনার ঘরের আঙিনায় ২ থেকে ৪ টি চুই গাছ লাগালেই আপনার পরিবারের চাহিদা মিটাতে পারবেন। এতে মরিচের বিকল্প হিসেবে চুইঝাল ব্যবহার করতে পারবেন। আর আপনি অতিরিক্ত কিছু সংখ্যক গাছ লাগিয়ে তা বিক্রি করে অনায়াসে কিছু টাকা আয় করতে পারবেন।
এবার আসি কিভাবে ফলাবেন চুইঝাল..
চুইঝাল গাছ লাগানোর একটি ভালো উপায় হলো অন্য কোনো গাছ যেমন মেহগনি, কড়ই ইত্যাদি ধরনের গাছের সাথে লাগানো। এতে ঐ গাছের কান্ড বেয়ে বেড়ে উঠতে পারবে চুইগাছ। এতে মুল গাছের কোনো সমস্যা হবে না। এছাড়া এগুলো মাটিতে লতানো ফসল হিসবেও জন্মে। সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ ফুট পর্যন্ত বাড়ে।
আর
গাছ লাগানোর বছর খানেকের মধ্যে তা খাওয়ার উপযোগী
হয়ে যায়। তবে গাছ লাগানোর ৪ থেকে ৫
বছর পর তা বাজারজাত
করাই ভালো হবে। এতে ভাল ফলন পাওয়া যায়। পাঁচ বছর পর একটি চুইগাছ
থেকে ২০ থেকে ২৫
কেজি চুইঝাল উৎপাদন সম্ভব। হেক্টর
প্রতি ২.০ মেট্রিক
টন থেকে ২.৫ মেট্রিক
টন ফলন পাওয়া যায়। চুইঝালের দামও মোটামুটি ভাল। কাচা চুইঝাল ১১০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। আর শুকনো চুইঝাল
১৫০০ টাকা থেকে ৪৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়।
এবার আসি চুইঝালের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কেমন....
প্রথমেই বলি চুইঝাল মুলত পাহাড়ি জিনিস। পাহাড়ি অঞ্চলে চুইঝাল প্রাকৃতিক ভাবেই জন্মে। অনেকেই এগুলো পাহাড়ি অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করে থাকেন। বাংলাদেশে আপনি চুইঝালের ব্যবসা করে টাকা আয় করতে পারেন। আবার মরিচের পরিবর্তে আমরা যদি চুইঝালের ব্যবহার নিশ্চিত করি তাহলে আমাদের কয়েক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব হবে। আবার অনেকে এই চুইঝাল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকেও চুইঝালের গুরুত্ব অনেক।
4.1 average based on all reviews.